শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন
Headline
Headline
গাইবান্ধায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন কুড়িগ্রামে প্রশ্ন ফাঁসের চাঞ্চল্যকর মামলায় আরো দুই শিক্ষকের রিমান্ড ঈশ্বরদীর সন্তান নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনীত ফজলে রাব্বীর আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন আ‘লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন গাইবান্ধা-৫ আসনে নৌকার মাঝি মাহমুদ হাসান রিপন বরগুনায় ঢুকতে দিচ্ছেনা ঢাকার কোনও বাস মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে মাহমুদ হাসান রিপন, ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন গোমস্তাপুরে মৎস্য বিভাগের অবৈধ জালে মৎস্য শিকার বন্ধে অভিযান পন্ড

দুই ছেলে ও স্ত্রী’র পাশে সমাহিত করা হয়েছে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াকে

Reporter Name / ১১০ Time View
Update : সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০২২, ৬:৫৫ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দুই ছেলে ও স্ত্রী’র পাশে সমাহিত করা হয়েছে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার মরদেহ। সেখানে বিকাল সাড়ে ৫টায় তার বাড়ী সংলগ্ন মসজিদে শেষ জানাযা নামাজের পর তাকে নেওয়া হয় পারিবারিক কবরস্থানে। পরে সেখানে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। গত শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কস্থ মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ক্যান্সারে ভুগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের জামাইকা ইসলামিক সেন্টারে ফজলে রাব্বী মিয়ার প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সবস্তরের জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর নিউইয়র্ক থেকে মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছায় সোমবার সকালে। পরে তাকে সড়কপথে নেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনের জাতীয় ঈদগাহ মাঠে। সেখানে দ্বিতীয় জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ও সর্বস্তরের জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখান থেকে তাকে সড়কপথে নেওয়া হয় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে।

বিমানবন্দর থেকে তাকে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে সাঘাটার বোনারপাড়ায় নেওয়া হয় দুপুরে। সেখান থেকে ফজলে রাব্বী মিয়াকে সড়কপথে নেওয়া হয় ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।এখানে ফজলে রাব্বী মিয়াকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. শাজাহান খান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খুরশিদ আলম, গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সাংসদ মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সাঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর কবীর, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফরহাদ আবদুল্লাহ হারুন বাবলু, পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছোট ভাই অধ্যক্ষ ফরহাদ রাব্বী। এরপর তৃতীয় জানাযা নামাজ সম্পন্নের পর জেলা প্রশাসক অলিউল ইসলাম, পুলিশ সুপারমোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ, সাত উপজেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিভাগের সরকারি দপ্তর, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়িসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ফজলে রাব্বী মিয়াকে নেওয়া হয় গটিয়া গ্রামে। সেখানে তার বাড়ী সংলগ্ন মসজিদে শেষ জানাযা নামাজের পর তাকে নেওয়া হয় পারিবারিক কবরস্থানে। সেখানে সন্ধ্যে ৬টায় দাফন সম্পন্ন হয়। জানাযার নামাজে জনপ্রতিনিধিসহ জেলার সাত উপজেলা এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাধারণ জনগণ, শুভাকাঙ্খী ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবার নাম ফয়জার রহমান এবং মায়ের নাম হামিদুন নেছা। ১৯৬১ সালে তিনি গাইবান্ধা কলেজে ভর্তি হন। তিনি বিএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ফজলে রাব্বী মিয়া আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করাকালীন রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল সনদ লাভের পর ১৯৮৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হন। ফজলে রাব্বীর চাচা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল ল’ চালু করলে ফজলে রাব্বী মিয়া সে সময় অষ্টম শ্রেণীতে পড়াকালীন চাচার মাধ্যমে মার্শাল ল’ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২-৬৩ সালে শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফজলে রাব্বী মিয়া ১১ নং সেক্টরে যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। পরে ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম এবং ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদানের পর তিনি ২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১৪ সালের দশম সংসদ থেকে আজীবন মহান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ফজলে রাব্বী মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ২০২০ সালের ২৬ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান। তার দুই ছেলে অনেক আগেই মারা গেছে। এছাড়া তার রয়েছে তিন মেয়ে। তাদের মধ্যে ফারজানা রাব্বী বুবলি ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর